পৃষ্ঠা

Monday, February 16, 2015

স্কেলিং (Scaling) কী ও কেন?

স্কেলিং কী ও কেন? (What's Scaling & Why?)

আমরা জানি দন্তক্ষয় /tooth decay/dental caries  সম্পর্কে, যার সূচনা হিসেবে দাঁতের গোড়ায় লেগে থাকা খাদ্যকণা ও খাদ্যকণা একসময় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ফলে জমে শক্ত হয়ে পাথর (Calculus) হয়ে যাওয়া দায়ী। এই পাথরে আবার আরো বেশি করে খাবার জমে জমে আরো বড় হয়ে যায়; যার ফলে মাড়িতে প্রদাহ (Inflammation of gum) হয়, দাঁতের চারপাশের অংশে প্রদাহের (Periodontitis) সৃষ্টি হয়। দাঁতের মাড়ি নীচের দিকে নেমে যায়, একসময় দাঁতের ভিত্তি দুর্বল হয়ে দাঁত নড়তে শুরু করে, অনেক সময় সেই দাঁত আর রাখা সম্ভব হয় না। এই দাঁতের গোঁড়ার পাথর ব্রাশ করে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়; আর তাই একজন ডেন্টিস্ট এর মাধ্যমে স্কেলিং (Scaling) করে নেয়ার প্রয়োজন হয়।

পূর্বে হাত দিয়ে হ্যান্ড স্কেলারের মাধ্যমে দাঁতের মাড়ি থেকে পাথর পরিস্কার করা হতো, কিন্তু বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবিস্কার আল্ট্রাসোনিক স্কেলার মেশিনের সাহায্যে স্কেলিং করা হয়; যা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ব্যাথামুক্ত পদ্ধতি।

কখন বুঝবেন স্কেলিং (Scaling) করে নিবেন?
-- আপনার মাড়ি থেকে কী রক্ত পড়ে?
-- মুখে দুর্গন্ধ হয়?
-- বিগত ৬ মাস আগে কী স্কেলিং করিয়েছিলেন? না করলে এখনি করে নিতে পারেন।

সাধারনত বছরে দুইবার স্কেলিং (Scaling) করে নিতে হয়।

মাড়ি থেকে রক্ত পড়া , মুখের দুর্গন্ধ দূর করা ও সজীব হাসি, প্রাণবন্ত দাঁত টিকিয়ে রাখতে হলে আর বিকল্প নেই।
তাই স্কেলিং করে নিন, সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করুন, ডেন্টাল ফ্লস ব্যাবহার করুন ।

সুস্থ্য থাকুন, নীরোগ থাকুন।
ধন্যবাদ।

Thursday, February 12, 2015

ব্রাশের ক্ষেত্রে ১০ টি সাধারণ ভুল--

 অনেকেই বলেন , আমরাতো প্রতিদিনই ব্রাশ করি তবু কেন আমাদের দাঁতের সমস্যা হয়?
দেখুনতো নীচের কোন পয়েন্টটি আপনি বাদ দিয়ে যাচ্ছেন?!


ব্রাশের ক্ষেত্রে ১০ টি সাধারণ ভুল--

১। সঠিক টুথব্রাশ ব্যাবহার না করা।
২। টুথব্রাশের সঠিক ব্রিসল নির্বাচন না করা।
৩। খুব দীর্ঘসময় বা খুব অল্পসময় দাঁত ব্রাশ করা।
৪। প্রতিবারই একই দিক থেকে ব্রাশ আরম্ভ করা।
৫। খুব আস্তে বা খুব জোরে ব্রাশ করা।
৬। সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ না করা।
৭। দাঁতের ভেতরের অংশে/পেছনের দিকে ব্রাশ না করা।
৮। ব্রাশ করে ভালভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে কুলি না করা।
৯। ব্রাশ ভেজা অবস্থায় ফেলে রাখা [ব্রাশ না শুকানো]
১০।রাতে ব্রাশ করে আবার মধ্যরাতে হালকা নাস্তা করা।

 ২-৩ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন না করা।
২।ছাই,কয়লা, পাউডার বা শক্ত কিছু দিয়ে ব্রাশ করা।

 আপনি চাইলে সবাইকে সচেতন করতে পারেন, পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে।

সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিজের দিকে খেয়াল রাখুন। ধন্যবাদ সবাইকে।

দাঁতে কী আসলেই পোকা হয়?

দাঁতে কী আসলেই পোকা হয়?
দন্তক্ষয় / Dental Caries/Tooth decay আসলে কী?

প্রথমেই বলে নেই দাঁতে সত্যিই কোন ধরনের পোকার অস্তিত্ব নেই। আসলে আমাদের মুখের ভিতরে যে সাধারন তাপমাত্রা থাকে তাতে কোন পোকার জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া থাকে যা খালি চোখে দেখা যায় না ।

এখন আসি মুল কথায় ,
দাঁত ব্রাশ করার নিয়ম হল সকালে খাবার পরে ও রাতে ঘুমাতে যাবার আগে । ধরি আমরা সবাই তাই করি । কিন্তু তবুও কিছু খাদ্য কণা দাঁতের আনাচে কানাচে লেগে থাকে ( বিশেষ করে যাদের দাঁত আঁকাবাঁকা ) এই খাদ্য কণা জমে থাকতে থাকতে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে থাকে এবং এক প্রকারের এসিড  নিঃসরণ করে । যা দাঁতের উপর শক্ত
অংশে (এনামেল/Enamel )ক্ষয়প্রাপ্তি তে সাহায্য করে এবং এক সময় ছোট্ট একটী কালো দাগ বা  স্পট  পড়ে। সেখানে আবার খাবার জমে জমে এক সময়ের  ছোট স্পট বা দাগটি বড় আকার ধারন করে । এটাই আসলে দন্তক্ষয় বা dental caries/ Tooth decay.

দন্তক্ষয়ের প্রধান কারনসমূহ(Causes of tooth decay):-

১। দাঁতের বিভিন্ন অংশে খাদ্যকণা লেগে থাকা।
২। আঠালো জাতীয় খাবার যেমনঃ- চকোলেট, বিস্কুট; এছাড়াও চিনি, মিষ্টি, কোক ইত্যাদি।
৩। বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাব।
৪। সময়- দাঁত ক্ষয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয়। সময়টা একদিন রাতে ব্রাশ না করলেই ব্যাকটেরিয়ার খাদ্যকণার মাঝে বংশবৃদ্ধি করার জন্য যথেষ্ট।

প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?

চিকিৎসা করার চেয়ে প্রতিরোধ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
নীচের নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুনঃ
১। আঠালো ও চিনিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
২। যে কোন কিছু খাবার পর ভালোভাবে কুলকুচি করুন।
৩। সঠিক নিয়ম ও সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করুন।
৪। কমপক্ষে ২-৩ মিনিট দাঁত ব্রাশ উচিত।
৫। নরম ও ছোট টুথব্রাশ ব্যবহার করুন (ব্রাশের মাথাগুলো দু'দিকে বেঁকে গেলেই পরিবর্তন করে ফেলা প্রয়োজন)।
 ৬। আপনার শিশুকে কিছু খাওয়ানোর পরে পরিস্কার সুতি কাপড় দিয়ে দাঁত মুছে দিন ও পানি খাওয়ান।
আপনার সোনামনির দাঁতের যত্ন নিতে ভুলবেন না!
৭। দন্তক্ষয় যাতে আর না হয় এজন্য ডেন্টিস্টের শরনাপর্ণ হউন।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

Friday, February 6, 2015

৫ টি সাধারণ বিষয়

:::::::সঠিকভাবে দাঁত ও মাড়ির যত্ন আপনার মুখের হাসি শ্রীবৃদ্ধি করার পাশাপাশি আপনার দাঁতের সুরক্ষা আজীবন নিশ্চিত করতে পারে। নিম্নের ৫ টি সাধারণ কাজ মেনে চলতে পারলে আপনার দাঁতের ক্ষয় রোগ ও মাড়ির সমস্যা থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে...


এই ৫ টি সাধারন বিষয় হল :

১। সঠিক ভাবে ও সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করা


২। দুই দাঁতের মাঝখানের খাবার পরিস্কার করার জন্য ফ্লস দিয়ে (চিকন নায়লনের সুতা, বাজারে ডেন্টাল ফ্লস নামে কিনতে পাওয়া যায়) ফ্লসিং করা ।

৩। সঠিক খাবার খাওয়া ( স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ভাজা পোড়া খাবার, জুস, সফট ড্রিংকস, আঠালো জাতীয় খাবার যা দাঁতের সাথে আটকে থাকতে পারে তা পরিহার করা

 

৪। বছরে ২ বার আপনার ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেয়া ও চেকআপ করানো ।

৫। দিনে ২বার ব্রাশের পর ভাল কোন মাউথ ওয়াস দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ধরে কুলি করে ফেলে দেয়া ( গিলে ফেলবেন না এবং একটানা দীর্ঘ দিন ব্যাবহার করবেন না )।

Monday, February 2, 2015

::::::: সময় থাকতে দাঁতের যত্ন নিন :::::::

দাঁত অমূল্য সম্পদ। খাবার চিবানো কিংবা কথা বলতে সাহায্য করা ছাড়াও ভুবন ভোলানো হাসি তৈরিতে দাঁতের জুড়ি নেই। দাঁতের বাইরের ঝকঝকে সাদা আবরণকে বলা হয় এনামেল। এ এনামেল দাঁতকে প্রতিরক্ষা দেয় বিভিন্নভাবে। তাই এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে দাঁতের আসল গঠনই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন একটি রোগ হচ্ছে ডেন্টাল ক্যারিজ। দাঁতের ক্ষয়রোগ বা ডেন্টাল ক্যারিজের (tooth decay/dental caries/দন্তক্ষয়) অন্যতম কারণ হচ্ছে ডেন্টাল প্লাক। দাঁতের গায়ের এ ময়লা আস্তরণ দাঁত ব্রাশ করে দূর করা সম্ভব হয় না। এ জন্য দাঁত স্কেলিং করতে হয়। কিন্তু অনেকেরই ধারণা দাঁত স্কেলিং করলে দাঁতের ক্ষতি হয়। কেউ কেউ ভাবেন এতে দাঁত পাতলা হয়ে যায়, দাঁত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।আবার কেউ কেউ মনে করেন যে স্কালিং করলে দাঁতের মাড়ি নিচের দিকে নেমে যাই, কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, দাঁত স্কেলিং   স্কেলিং (Scaling)   করালে দাঁতের ক্ষতি হয় না কিংবা দাঁত পাতলা হয়ে যায় না। বরং স্কেলিং (Scaling) না করার ফলে দাঁতের গোঁড়ায় ক্যালকুলাস বা পাথর জমতে জমতে মাড়ি নিচের দিকে নামতে থাকে, স্কেলিং করে পরিস্কার করলে ওটা দৃশ্যমান হয় মাত্র। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এতে করে দাঁত পরিষ্কার হয় এবং মুখে দুর্গন্ধ থাকে না। এবং দাঁত ও মাড়ি ভাল থাকে, দাঁত রক্ষা পায়  দন্তক্ষয় এর মতো বেশকিছু ক্ষতির আশঙ্কা থেকে।

আজকাল দাঁত স্কেলিং  করার জন্য আলট্রাসনিক স্কেলিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি একটি সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে দাঁতের গায়ে লেগে থাকা ডেন্টাল প্লাক/দাঁতের পাথর ও দাগ দূর করা যায়। দাঁতের এ দাগ এটা-সেটা দিয়ে তোলা উচিত নয় বরং তাতেই দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।

ধন্যবাদ সবাইকে, ভাল থাকুন সবাই...।।
 ডা. তুহিন শর্মা
 ওরাল হেলথ্ ও রিসার্চ সেন্টার
       (সনোল্যাবের পাশে)
        ধাপ, জেল রোড; রংপুর।

আপনার সোনা মণির জন্য দাঁতের যত্নে ৭ টি টিপস

আপনার আদরের সোনা মণির জন্য দাঁতের যত্নে (tooth care) ৭ টি টিপস (tips).........

১। আপনার শিশুর দুধ দাঁত না উঠলেও ফিডার বা দুধ খাওয়ানোর পরে পরিস্কার ভেজা সুতি কাপড় বা ভেজা গজ দিয়ে মাড়ি পরিস্কার করে দিবেন।

২।অধিকাংশ অভিভাবকই মনে করেন যে বাচ্চাদের দুধ দাঁতের যত্নের প্রয়োজন নেই,কারন দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী বা আসল দাঁত উঠবে। ভুল ধারণা। কারন দুধ দাঁতই স্থায়ী বা আসল দাঁত ওঠার জায়গা ধরে রাখে,যে দাঁত দিয়ে আপনার শিশু খাবার খাবে বা কথা বলবে। দুধ দাঁত যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে ক্ষয় হয়ে যায়, মাড়িতে ইনফেক্বেশন হয় বা পড়ে যায় তবে স্থায়ী বা আসল দাঁত ওঠার সময় বেশি জায়গা পেয়ে আঁকাবাঁকা হয়ে উঠতে পারে।

৩। সাধারনত বাচ্চাদের নিচের মাড়ির সামনের ২ টা দাঁত প্রথমে ওঠে। তখন থেকেই যে কোন কিছু খাবার পর দাঁত ও মাড়ি মুছে দিবেন।কখনই দীর্ঘ সময়ের জন্য বাচ্চাকে ফিডার মুখে নিয়ে থাকতে দিবেন না এবং ফিডার মুখে নিয়ে যেন ঘুমিয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নতুবা ক্যারিজ হয়ে দাঁতে ক্যাভিটি বা গর্ত হয়ে যাবে সহজেই।

৪। অধিকাংশ শিশু খাদ্য খাওয়ার পর পানি দিয়েই পরিস্কার হয়ে যায়,তবে যত দ্রুত সম্ভব (২৪ মাস পর)বাচ্চাকে ব্রাশের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। ব্রাশ অবশ্যই নরম হতে হবে।

৫। পারতপক্ষে চকলেট,মিমি,কেক,জুস নিয়মিত না খাওয়াতে চেষ্টা করবেন। হঠাৎ কখনো খেলে ভাল করে পরিস্কার করে দিবেন এবং পানি খাওয়াবেন।

৬। বাচ্চার বয়স যখন কমপক্ষে ৩ বছর হবে যখন সে টুথপেস্ট গিলে ফেলার পর্যায়ে নেই তখন তার ব্রাশে ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিন। ফ্লুরাইড দাঁতের ক্ষয় রোধ করার জন্য জরুরী।

৭। আমেরিকান ডেন্টাল এসোসিয়েসনের মতে বাচ্চার দাঁতের নিয়মিত চেকআপ ১ বছর হওয়ার পরই করানো উচিত। কিন্তু অধিকাংশ চিলড্রেন ডেন্টিস্ট এর মতে ৩ বছরের পরে বাচ্চাকে ডেন্টিস্ট এর কাছে নিয়ে চেকআপ করানো উচিত ,এর আগে পর্যন্ত ঘরেই যত্ন নিতে পারেন।

যদি আপনি আপনার আদরের শিশুটিকে ছোট বেলা থেকেই দাঁতের যত্ন নিতে শেখান তবে সে এটা অভ্যাসে পরিণত করবে, ফলে আপনার সোনামণির দাঁত হবে সুস্থ, সবল ও হাস্যজ্জল।
 আপনিও চাইলে সবাইকে সচেতন করতে পারেন, পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে।
সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, আপনার শিশুর দিকে খেয়াল রাখুন।
 ধন্যবাদ সবাইকে।

ডা. তুহিন শর্মা
বিডিএস (ডি ইউ),পি.জি.টি (এস.এস.এইচ),ঢাকা।
ওরাল হেলথ্ ও রিসার্চ সেন্টার
       (সনোল্যাবের পাশে)
        ধাপ, জেল রোড; রংপুর।

কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কথা......

কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কথা......(Some important tips)

* দাঁত ব্রাশের আগে ডেন্টাল ফ্লস (Dental Floss) [এক ধরনের নাইলনের চিকন সুতা, বাজারে ডেন্টাল ফ্লস (Dental Floss) নামে কিনতে পাওয়া যায়] দিয়ে দাঁত ফ্লসিং করে নিন।
* আপনার ব্রাশটি ৩ মাস পর পর পরিবর্তন করুন [ব্রাশের ব্রিসলগুলো বাঁকা হয়ে গেলেই নতুন ব্রাশ ব্যাবহার করুন।]
* বামে ডানে ব্রাশ না করে উপরের দাঁত উপর থেকে নিচে এবং নিচের দাঁত নিচ থেকে উপরের দিকে ব্রাশ করুন,একইভাবে দাঁতের ভিতরের দিকেও ব্রাশ করুন। দাঁতের উপরের অংশ[যে অংশ দিয়ে আমরা খাবার চাবাই],উপরের তালু এবং জিহ্বাও পরিস্কার করুন।
*মাঝারি ধরনের ও নরম ব্রিসল আছে এমন ব্রাশ ব্যাবহার করুন।
* ব্রাশের পর মাউথ ওয়াশ দিয়ে ৩০ সেকেন্ড কুলি করে ফেলে দিন।
* মিষ্টিজাতীয় পানীয় সরাসরি না পান করে পাইপ দিয়ে পান করুন,এতে দাঁতের সংস্পর্শ পরিত্যাগ করা যাবে এবং এনামেল ক্ষয় কম হবে।
* এ ধরনের জুস বা কোক পান করার পরে ভালো করে কুলি করে নিন, কারন এসব ড্রিংকে অনেক ধরনের ক্ষতিকর এসিড থাকে।।
*গাভীর দুধ পান করুন, দুধে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম আছে;যা হাড় এবং দাঁত শক্ত করতে কাজ করে।
* খাবারের পরে চুইংগাম চাবাতে পারেন, যা মুখ ভেজা রাখবে এবং দাঁতের খাদ্যকনা পরিস্কারে সাহায্য করবে।
*ধূমপানের অভ্যাস থাকলে পরিহার করুন নতুবা মুখে দুর্গন্ধ (Bad smell) হবে, মাড়িতে প্রদাহ ( Inflammation of gum) হবে।
  
আপনি চাইলে সবাইকে সচেতন করতে পারেন, পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে।
সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন,নিজের দিকে খেয়াল রাখুন। ধন্যবাদ সবাইকে।


ডা. তুহিন শর্মা
বিডিএস (ডি ইউ),পি.জি.টি (এস.এস.এইচ),ঢাকা।
ওরাল হেলথ্ ও রিসার্চ সেন্টার
       (সনোল্যাবের পাশে)
        ধাপ, জেল রোড; রংপুর।
রংপুর।

Sunday, February 1, 2015

মুখে ঘা ও প্রতিরোধ

মুখে ঘা:

মুখের ভেতর ছোট ছোট দানা। ঝাল কোনো খাবার খেলেই যন্ত্রণা বেড়ে যায়। মনে হতে পারে, এটি কঠিন কোনো অসুখ। আসলে মুখের ভেতরের ঝিল্লি আবরণ কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে মুখে ছোট ছোট দানার মতো ঘা দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু বারবার মুখে ঘা হলে এবং তা না সারলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। মুখে ঘা মারাত্মক কোনো রোগ নয় চিকিৎসার পরও যদি মুখের ঘা দু-তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তখন এর সঠিক কারণ বের করার জন্য পরীক্ষা করাতে পারেন। সাধারণত অজান্তে মুখ বা জিবে কামড় পড়লে, শক্ত টুথব্রাশ বা সুচালো বাঁকা দাঁতের আঘাতে, দাঁত ক্ষয়রোগ এবং মুখের পরিচ্ছন্নতা বজায় না থাকলেই ঘন ঘন মুখে ঘা হয়ে থাকে। এ ছাড়া নানা ধরনের ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ, ভিটামিনের অভাব, বিভিন্ন
ওষুধের প্রতিক্রিয়ায়ও ঘা হতে পারে। যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হূদেরাগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাঁদের মুখে জীবাণু বিস্তার করে এমন ঘা হতে পারে। লিউকোমিয়া, লাইকেন প্লানাস ইত্যাদি কারণেও মুখে ঘা হতে পারে। তবে সাধারণত সবচেয়ে বেশি যে কারণে মুখে ঘা হয়, তাকে বলে অ্যাপথাস আলসার। জিব, মাড়ি ও মুখের ভেতর দিকে অনেকটা ব্রণের মতো দেখতে সাদা ফুসকুড়ি বের হয়। এটি বারবার হয়। বিশেষ কোনো ভিটামিনের স্বল্পতা, কোনো দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, মুখের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। তবে রক্ত পরীক্ষার পর জেনে নিতে হবে কী কারণে এ ধরনের ঘা হচ্ছে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেলে সেরে যাবে।

কী করতে হবে:

 
-প্রচুর পানি পান করুন।
-লবণ-পানি দিয়ে বারবার কুলি করুন।
-মেডিকেটেড মাউথওয়াশ (Mouthwash) অ্যান্টিসেপটিক জেল
ব্যবহার করতে পারেন।
-মাড়িতে প্লাক জমলে তা অবশ্যই
স্কেলিং (Tooth Scaling) করিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
-ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগের সঠিক
চিকিৎসা বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
-ভিটামিন ‘বি’-র স্বল্পতা, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, মুখ
অপরিষ্কার, মানসিক
অস্থিরতা ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
-নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।
-ধূমপান, জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস
ত্যাগ করা।
-প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করুন।


মুখ ও জিবের পরিচ্ছন্নতা:

 
-প্রতিদিন দুবার অন্তত দুই মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ
করবেন
-দুই থেকে তিন মাস অন্তর ব্রাশ পরিবর্তন করবেন
-চিনি, চিনির তৈরি খাবার—যেমন মিষ্টি,
চকলেট, জুস, কোমল পানীয়
ইত্যাদি বেশি খাওয়া ঠিক নয়। আঠালো চকলেট আরও
ক্ষতিকর।
-প্রতিদিন লবণ-পানি দিয়ে কুলি করার অভ্যাস
ভালো।
-ধূমপান বন্ধ করুন। গুল-জর্দা বা তামাক ব্যবহার
করবেন না।



-বছরে দুই বার অন্তত Dentist এর পরামর্শ নিন।